রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন
সাভার থেকে নাজমুল হক ইমুর পাঠানো প্রতিবেদন:
ঢাকার সাভারে দীর্ঘদিন প্রেমের পর বিয়ে করার জন্য চাপ দেওয়ায় প্রেমিকের বন্ধুর বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে জারা আক্তার সেতু নামে এক তরুণীকে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড প্রেমিক সাইফুল ইসলাম আকাশকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
প্রেমিকা জারা আক্তার সেতুকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতারকৃত প্রেমিক সাইফুল ইসলাম আকাশ।
মঙ্গলবার ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় তিনি এ জবানবন্দি দেন।
এর আগে নিহতের বড় বোন মিতু আক্তার বাদী হয়ে সাইফুল ইসলাম আকাশকে প্রধান আসামী করে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা (মামলা নং -৭৭) দায়ের করেন।
রোববার রাত সাড়ে ১১ টায় সাভার পৌর এলাকার বাড্ডা মহল্লার একটি বাড়িতে প্রেমিকের হাতে হত্যাকাণ্ডের স্বীকার হন জারা আক্তার সেতু।
নিহত তরুণী জারা আক্তার সেতু (২০) পাবনা জেলার সাথিয়া থানার এরশাদ আলীর মেয়ে। তিনি সাভার পৌরসভার ছায়াবীথি অগ্রণী হাউজিং এলাকার বাচ্চু মিয়ার বাড়ির তৃতীয় তলায় ভাড়া থেকে পার্লারে কাজ করতেন। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করা যুবক সাইফুল ইসলাম আকাশ (২০) টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানার বাগকাটারি গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে। তিনি সাভার পৌরসভার ছায়াবীথি এলাকার আইয়ুব আলীর বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, গত ২৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০ টায় নিহত জারা আক্তার সেতু তার ভাড়া বাসা থেকে বের হয়ে আসামি সাইফুল ইসলাম আকাশের সঙ্গে আকাশের বন্ধু আবু সাঈদের বড় ভাইয়ের ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে বের হন। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে খাওয়া-দাওয়া শেষে রাত সাড়ে ১১ টায় সাইফুল ইসলাম আকাশ ও ভিকটিম যারা আক্তার সেতু আকাশের বন্ধু আবু সাঈদের ভাইয়ের বাড়ির ছাদে যায়। এ সময় জারা আক্তার সেতু আসামি সাইফুল ইসলাম আকাশকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সাইফুল ইসলাম আকাশের সঙ্গে জারা আক্তার সেতুর বাগবিতণ্ডা হয়। কেউ কোন কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই এক পর্যায়ে আকাশের কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে ভিকটিমের বুকে এবং নাভির উপরে দুটি আঘাত করে। এতে সেতুর প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। সেতুর আত্মচিৎকারে জন্মদিনের পার্টিতে আসা আকাশের অন্যান্য বন্ধুরা ছাদে ছুটে যায়। পরে আকাশ এবং তার বন্ধুরা মিলে সেতুকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা সেতুকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে শেরে-বাংলা নগর থানা পুলিশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে নিহত জারা আক্তার সেতুর সুরত হাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। পরে নিহতের বোন মিতু আক্তার বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে ১ অক্টোবর ভোররাতে ছায়াবীথি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড সাইফুল ইসলাম আকাশকে গ্রেপ্তার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। আকাশকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ধারালো চাকু দ্বারা বুকের মাঝখানে, পেটের নাভির উপরে সেতুকে আঘাত করে সাইফুল ইসলাম আকাশ। পরে আদালতে সোপর্দ করা হলে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাইফুল ইসলাম আকাশ।